- রাসূলের চোখে দুনিয়া
দুনিয়া এক রহস্যঘেরা জায়গা। এখানে মানুষ আসে। শৈশব, কৈশোর আর তারুণ্যের সিড়ি বেয়ে বার্ধক্যে পৌঁছে। তারপর হঠাৎ একদিন চলে যায়। এই স্বল্পতম সময়ে দুনিয়াবি সফলতার সিঁড়ি বেয়ে উপারে উঠার জন্য মানুষের কি নিরন্তর চেষ্টা। অথচ সে জানে না উপরে উঠতে গিয়ে সে কতটা নিচে নেমে যাচ্ছে।
দুনিয়ার সাথে আমাদের সত্যিকার সম্পর্ক কী? দুনিয়ার ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হওয়া উচিত? প্রকৃত সফলতা কিসে? নবী রাসূলদের জীবন ও বক্তব্য থেকে এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে পড়ুন ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) রচিত এক কালজয়ী গ্রন্থ ‘কিতাব যুহুদের’ অনুবাদ এই ‘রাসূলের চোখে দুনিয়া’ - সাহাবিদের চোখে দুনিয়া
- কুরআনে সবচে’ বেশী আলোচিত হয়েছে বনী ইসরাইলের ঘটনা।
বনী ইসরাইলকে যখন মুসা (আ) আল্লাহর নির্দেশে ফিরআউনের যুলুম থেকে উদ্বার করলেন, আল্লাহ তা’আলা তাদের প্রতি নেয়ামত স্বরূপ ‘মান্না- সালওয়া’ নামক এক প্রকার পাখি পাঠান। তাফসীর গ্রন্থ থেকে জানা যায়, এই পাখিগুলো জমিনে এসে হাতের নাগালেই বসে থাকতো। মানুষ যখন ইচ্ছে সেগুলোকে ধরে খেতে পারতো।
কিন্তু জীবনের একটা দীর্ঘ সময় ফিরআউনের দাসত্বে কাটানোর ফলে তাদের অন্তর যেন বার বার পূর্বের জীবনের দিকে ফিরে চলছিল। তারা আল্লাহর এই নেয়ামতকে বেশীদিন পছন্দ করতে পারলো না, ফেলে আসা দাসত্বের সময়কার খাবারের চাহিদা তাদের মাঝে জাগ্রত হল। চেয়ে বসলো সেই ডাল-পেয়াজ খাবার। এরকম অকৃতজ্ঞতার ফলে আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি হারাম করে দিলেন মান্না সালওয়া। দুর্ভাগা এই জাতি বঞ্চিত হল আসমানি তোফা।
.
বনী ইসরাইল অভিশপ্ত জাতিতে পরিণত হওয়ার পিছনে কারণগুলোর ভিতর একটা অন্যতম কারণ ছিল, দুনিয়ার প্রতি এ্যাটাচমেন্ট এবং নেয়ামতের প্রতি অকৃতজ্ঞতা।
প্রত্যেক যুগে নবি রসুল এসেছিল জাতিকে এই দুনিয়া পুজা থেকে মুক্ত করে আল্লাহর উবুদিয়াতের দিকে ফিরিয়ে আনার জন্য। ‘যুহুদ’ বা দুনিয়াবিমুখতা নবি এবং আল্লাহ ওয়ালাদের অন্যতম একটি আমল।
কিন্তু “দুনিয়াকে কতটুকু নিতে হবে?” এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে এক শ্রেণীর মানুষ হয়েছে সংসার বিরাগী। ইসলামে বৈরাগ্যবাদের কোনো স্থান নেই; তবে যুহুদ-এর গুরুত্ব অপরিসীম। কীভাবে দুনিয়াতে অবস্থান করেও দুনিয়া বিমুখ জীবনযাপন করতে হয়, সেই শিক্ষা হাতে কলমে শিখিয়ে গেছেন রসূল ﷺ, আর তাঁর শেখানো পদ্ধতিতে আমল করে গেছেন সাহাবা রদিয়াল্লাহু আনহুম আজমাইন।
.
নববী যুগের নিকটতম সময়ে যুহুদ নিয়ে যেসব সহী হাদীসের গ্রন্থ সংকলন করা হয়েছিল, সেসবের মধ্যে অন্যতম প্রাচীন গ্রন্থ হচ্ছে ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল রহ. এর ‘কিতাবুয যুহুদ।’
এ বইয়ের প্রথম ভাগ ‘রাসূলের চোখে দুনিয়া’ নামে সর্বপ্রথম অনুবাদ হয় বাংলায়। সেই ধারাবাহিকতা থেকে পরবর্তী অংশ ‘সাহাবাদের চোখে দুনিয়া’ এবার প্রকাশিত হল। - তাবিয়িদের চোখে দুনিয়া
- প্রথম তিন প্রজন্ম (সালফে সালেহীনগণ) দুনিয়াকে যেভাবে দেখেছেন, সেটাই ছিল সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি। একজন মুসলিম যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি বিবেচনায় রেখে এই দুনিয়াকে দেখবে, ততক্ষণ যে নিরাপদ থাকবে। কিন্তু যখন তার দৃষ্টি পাশ্চাত্যের দিকে, অবিশ্বাসীদের দিকে কিংবা নিজ প্রবৃত্তির দিকে ঝুঁকে যাবে, তখন সে বিপদের সম্মুখীন হবে। তার দুনিয়াও বরবাদ হবে, আর আখিরাতেও সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তাই দুনিয়ার ব্যাপারে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি কোনটা, সে বিষয়ে জ্ঞান রাখাটা জরুরি। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল তাঁর “কিতাবুয যুহ্দ” গ্রন্থে দুনিয়ার ব্যাপারে সালফে সালেহীনদের দৃষ্টিভঙ্গি কী ছিল, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন।
Add your review
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Please login to write review!
Looks like there are no reviews yet.